আরবি পড়ার সহজ নিয়ম, (সাকিন ও তাশদীদের পরিচয়) How to read Arabic easily Part - 02

 আরবিতে সাকিন এবং তাশদীদের উচ্চারণ

আরবি পড়ার সহজ নিয়ম, (সাকিন ও তাশদীদের পরিচয়) How to read Arabic easily Part - 02, আরবি পড়বো কিভাবে?

» সাকিনের উচ্চারণ

সাকিন (  ْ ) এর উচ্চারণ বাংলায় হসন্ত আনলে যেরকম হয় সেরকম। “আরবি” এই শব্দটা বলার সময় প্রথমে আমরা “আর” বলে থেমে যাই তারপর  বলি “বি” । এভাবে হয়  “আর্ + বি = আরবি” “আম্+ রা = আমরা”। আরবিতে সাকিনের উচ্চারণ ঠিক এভাবেই করতে হয়। সাকিনকে পড়তে হয় আগের হরফের সাথে মিলিয়ে । যেমন---

আলিফ ( ا ) র ( ر ) যবর = আর ( اَرْ )
বা ( ب ) র ( ر ) যের = বির ( بِرْ  )
বা ( ب ) র ( ر ) পেশ = বুর ( بُرْ )
উল্লেখ্য, সাকিনের আরেক নাম জযম। এবং এর তিনটি রুপ বা ভিন্ন চেহারা আছে।

» তাশদীদের উচ্চারণঃ

আর তাশদীদ (  ّ) দিলে একই হরফ দুইবার পড়তে হয় । একবার সাকিনের উচ্চারণ আরেকবার হরফে লিখিত হরকত বা তানভীনের উচ্চারণ। যেমন---
“আল্লাহ( اَللهُ )” শব্দের “লাম( ل )” হরফের উপর একটি তাশদীদ রয়েছে। শব্দটা অতি পরিচিত এবং সকলেই চেনে। সম্ভবত এমন কোন মানুষ নেই যে শব্দটি চেনে না। 
এখন কিভাবে এটা  উচ্চারিত হলো সেদিকে খেয়াল করি। প্রথমে আলিফের উপর যে যবর ( اَ ) রয়েছে সেটা “তাশদীদযুক্ত লাম ( لّ ) ”এর সাথে সাকিনের ন্যায় উচ্চারিত হবে। এরপর তাশদীদের উপর যে খাড়া যবর ( ٰ ) রয়েছে সেটার উচ্চারণ হবে।

উল্লেখ্য, মদ্দ বা টেনে পড়ার জন্য হরকতের তিনটি আলাদা রুপ আছে। যবর (  َ ) এর জন্য খাড়া যবর ٰ ), যের (  ِ ) এর জন্য খাড়া/খাড়ি যের (   ٖ  ) এবং পেশ  (  ُ ) এর জন্য উল্টা পেশ  ٗ )যবর(  َ) আর খাড়া যবর ٰ ), যের (  ِ ) আর খাড়া/খাড়ি যের  ٖ  )পেশ (  ُ ) আর উল্টা পেশ  ٗ ) একই উচ্চারণ দেয়, শুধু একটা টানতে হয় না আরেকটায় টেনে সময় নিয়ে পড়তে হয় । এটা কুরআন, হাদিস পড়ার ক্ষেত্রে আর এটা শিখতেও শিক্ষক প্রয়োজন। আমরা সবগুলো একইভাবে উচ্চারণ করবো, টেনে পড়তে যাব না।

এখন আমরা তাশদীদের (  ّ ) আরেকটি উদাহরণ দেখবো। 
আরবি শব্দ উম্মুন( اُمٌّ ) এর অর্থ মা।
উচ্চারণের দিকে খেয়াল করি, যে শব্দের উপর তাশদীদ আছে, বাংলার ক্ষেত্রে সেখানে আমরা একই বর্ণ দুই বার দেখতে পাচ্ছি।

উম্+মুন (  اُمْ + مُنْ  ) । তাহলে আমরা সহজে বলতে পারি তাশদীদ (  ّ ) থাকলে হরফটা  দুই বার উচ্চারিত হয় । একবার সাকিনের ( اُمْ ) মতো এবং পরের বার হরফে যে হরকত (যবর, যের, পেশ) বা তানভীন (দুই যবর, দুই যের, দুই পেশ) থাকবে তার উচ্চারণ (  مٌ )।

তাশদীদ থাকলে বানানের সময় এভাবে পড়তে হয়--

* আলিফ ( ا ) মিম ( م ) পেশ(  ُ ) = উম্ (اُمْ)+ ম (م) দুই পেশ(  ٌ ) = মুন (مٌ),,,, উম্ ( امْ)+মুন( مٌ) = উম্মুন (اُمٌّ)

* আলিফ(ا) নুন (ن) যের (  ِ ) = ইন্ (اِنْ) + ন (ن) যবর (  َ ) = না (نَ),,,,,, ইন্ (اِنْ) +না (نَ) = ইন্না (اِنَّ)

» আরবি হরফ সমূহের বিভিন্ন রুপঃ

এতক্ষণ যা কিছু আলোচনা করলাম এগুলো অনেকটাই সহজ এবং মনে রাখাও কঠিন নয়। কিন্তু এখন যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে সেটা পড়তে সহজ কিন্তু মনে রাখাটা একটু কঠিন। তবে ভয়ের কারণ  নেই। যত চর্চা করবেন তত সহজ হয়ে যাবে। 

আরবি হরফ সমূহের সাধারণত ৩ টি রুপ আছে। যুক্তহলে এদের রুপের পার্থক্য হয়। কোন শব্দের প্রথমে , মাঝে  এবং শেষে রুপের ভিন্নতা। কখনো আবার দেখতে একই কিন্তু উপরের “নুকতা” অনুসারে হরফকে চিনতে হয়। সে কারণে একটু ঝামেলা পোহাতে হয়। মূলত হরফগুলো ভালোভাবে আয়ত্ব করতে পারলেই আরবি রিডিং পড়া একদম সহজ। 

১ম পর্বে আমরা আরবি হরফগুলো দেখেছি। সেখানে যে হরফের উপর যে কয়টা “নুকতা” আছে  সেটা খুব মনোযোগের সাথে খেয়াল করতে হবে। আপনাদের সুবিধার্থে আমি প্রত্যেকটি হরফের শুরু, মাঝ এবং শেষের রুপগুলো পিডিএফ আকারে দিয়ে দিচ্ছি। আপনারা এটা মনোযোগ দিয়ে পড়লে এবং একটু প্র্যাকটিস করলেই সফল হয়ে যাবেন, ইনশাআল্লাহ।

 
» নুকতা কি? নুকতাযুক্ত হরফ কয়টি এবং নুকতা ছাড়া হরফ কয়টি?

আরবি হরফগুলোর মধ্যে কিছু হরফের উপরে, আবার কিছু হরফের নিচে ১ টি, ২টি বা ৩টি ফোটা দেখা যায়, এই ফোটাগুলোকে “নুকতা” বলে।
আরবিতে নুকতা যুক্ত হরফ ১৫ টি। যথা-
ب ـ ت ـ ث ـ ج ـ خ ـ ذ ـ ز ـ ش ـ ض ـ ظ ـ غ ـ ف ـ ق ـ ن ـ ي

আর বাকি ১৪ টি  হরফ নুকতা ছাড়া।
ا ـ ح ـ د ـ ر ـ س ـ ص ـ ط ـ ع ـ ك ـ ل ـ م ـ و ـ ه ـ ء

হরফগুলো ভালোভাবে খেয়াল করুন এবং এদের ৩ টি অবস্থা চর্চা করুন। 

আপনাদের জন্য কয়েকটি হরফ  লিখে যাচ্ছি, দেখেন চিনতে পারেন কি না? কমেন্ট বক্সে উত্তর দিয়ে যাবেন, ইনশাআল্লাহ।

১।     ـتـ
২।    ـعـ
৩।    فـ

যে কোন সমস্যা, কমেন্ট প্লিজ.





Post a Comment

1 Comments