আরবি ব্যাকরণ শিক্ষা A to Z (১ম পাঠ- ভূমিকা/আরবি ব্যাকরণের পরিচয়)

 

১ম পাঠ- (আরবি ব্যাকরণের পরিচয়)


আরবি ব্যাকরণ শিক্ষা A to Z (Arabic Grammar)


ব্যাকরণঃ আরবিতে ব্যাকরণকে কাওয়াইদ (قَوَاىٕدُ ) বলে

যে জ্ঞান/বিদ্যা/ইলম অর্জন করলে ভাষা শুদ্ধরুপে লিখতে, পড়তে বলতে পারা যায়, তাকে ব্যাকরণ বলে

সঙ্গানুসারে, এখন যদি ভাষাটি আরবি হয়, তবে তাকে আরবি ব্যাকরণ ভাষাটি বাংলা হলে, বাংলা ব্যাকরণ এবং ইংরেজি ভাষা হলে, ইংরেজি ব্যাকরণ

অতএব,

 যে ইলম/বিদ্যা অর্জন করলে আরবি ভাষা শুদ্ধরুপে লিখতে, পড়তে বলতে পারা যায়, তাকে আরবি ব্যাকরণ (কাওয়াইদুল আরাবিয়্যাহ) বলে

সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ

আরবি ভাষার কোন ব্যাকরণ ছিলো না সর্বপ্রথম বিশিষ্টি তাবেয়ী আবুল আসওয়াদ আদ দুয়াইলী ()আলী (রা্ঃ)  এর অনুমতিক্রমে আরবি ব্যাকরণের একটি অংশ ইলমুন নাহু রচনা করেন আর ক্ষেত্রে তিনি কুরআনের ভাষার আলোকে ব্যাকরণটি রচনা করেন

ঘটনাটি হলো- আলী (রা্ঃ) এর শিষ্য, বিশিষ্ট তাবেয়ী আবুল আসওয়াদ আদ দুয়ালী () একদা শুনতে পান, জনৈক ব্যক্তি কুরআনের আয়াত ভুল তেলাওয়াত করছে আবুল আসওয়াদ আদ দুয়ালী () ধরণের অশুদ্ধ তেলাওয়াত শ্রবণ করে ব্যাপারটি ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী (রা্ঃ) কে অবহিত করেন তিনি বলেন, মানুষ ভাষার নিয়মকানুন তথা ব্যাকরণ না জানার ফলে ধরণের কুফরী কালাম করছে

আবুল আসওয়াদ আদ দুয়ালী () আরজ করলেন, আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি আরবি ভাষার কতগুলো নিয়মনীতি প্রণয়ন করবো, যার ফলে মানুষ শুদ্ধ করে আরবি বলতে পারবে এবং ভুলত্রুটি থেকে বাঁচতে পারবে আলী (রা্ঃ) তাঁকে অনুমতি প্রদান করে বললেন- اقصد نحوه  অর্থ্যাৎ অনুরুপ কাজ করুন

তাঁর পবিত্র মুখনিঃসৃত বাণী নিঃসন্দেহে বরকতপূর্ণ তাই نحو (নাহু) শব্দটিকে আবুল আসওয়াদ আদ দুয়ালী () নামকরণের জন্য বাছাই করেন অতঃপর আবুল আসওয়াদ আদ দুয়ালী () সর্বপ্রথম আরবি ভাষার যেসব নিয়মকানুন বা ব্যাকরণ প্রণয়ন করেন, তারই নাম হলো علم النحو(ইলমুন নাহু) ;

অর্থ্যাৎ আরবি ব্যাকরণের প্রথম রচিত অংশটি হলো علم النحو(ইলমুন নাহু);

মুলত আল কুরআনের আলোকেই আরবি ব্যাকরণ রচিত কেননা, পবিত্র কুরআনই একমাত্র নির্ভরযোগ্য কিতাব যাতে ভুল তো দূরে থাক সামান্য পরিমাণ সন্দেহ পর্যন্ত নেই অতএব, যারা ব্যাকরণ শিখে কুরআনের ভুল ধরতে চায়, তাদের চেয়ে নির্বোধ অন্য কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর

 

আরবি ব্যাকরণ শিক্ষার গুরুত্বঃ

আমরা ছোটবেলা থেকেই কুরআন পড়তে শিখি কিন্তু এর ভাবগত সৌন্দর্য, ছন্দময় অপূর্ব উক্তি কিংবা এর অর্থ কোনটিই বুঝি না এ কারণে দেখা যায়, সারা জীবন শুধু কুরআন পড়েই যাই বাস্তবে এর কোন ফলাফল হয় না পবিত্র কুরআনুল কারীম শুধু দেখে দেখে রিডিং বা তেলাওয়াত করার জন্য নাযিল হয় নি বরং মহান আল্লাহ আমাদের কি দিক নির্দেশনা দিয়েছেন সেটাই মূখ্য বিষয়

আমাদের কুরআন পড়লেই হবে না বরং এর অর্থ বুঝে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে আর কোন ভাষা ভালোভাবে বুঝতে হলে সেই ভাষার ব্যাকরণ জানা জরুরী আমাদের পবিত্র কুরআন এবং হাদীসের ভাষা আরবি তাই কুরআন হাদিস ভালোভাবে জানতে, বুঝতে আরবি ভাষায় যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে আর তাই আরবি ভাষার ব্যাকরণটা জানাও জরুরী

এই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেই আলেম-উলামাগণ ধারাবাহিকভাবে আরবি ভাষা দরস দিয়ে যাচ্ছেন মাদ্রাসা, মক্তব, ইন্টারনেট  বিভিন্ন মাধ্যমে চলছে আরবি ব্যাকরণ শিক্ষাদানের কাজ আমরাও এখানে চেষ্টা করবো আরবি ব্যাকরণ শিখার একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ আরবি ব্যাকরণ শিক্ষা করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ…..

আল্লাহর কাছে তাওফিক কামনা করছি ।।।।।।।।

 

আরবি ব্যাকরণ সাধারণত ৫ ভাগে বিভক্ত

. علم الاملاء  (ইলমুল ইমলা): আরবি বর্ণমালার উচ্চারণ, বানান সম্পর্কিত জ্ঞান (বর্ণতত্ত্ব)

.  علم الصرف(ইলমুস সরফ): আরবি শব্দের রুপান্তর সম্পর্কে জ্ঞানার্জন হয় (শব্দতত্ত্ব)

.  علم النحو(ইলমুন নাহু): আরবি বাক্যের গঠন পদ্ধতি বর্ণনা করে (বাক্যতত্ত্ব)

. علم العرروض  (ইলমুল উরুদ): ছন্দ বা পঙক্তি বিষয়ক আলোচনা (ছন্দতত্ত্ব)

. علم البلاغة  (ইলমুল বালাগাত): সুসজ্জিত বাক্য ব্যবহারের জ্ঞান লাভ হয় (অলংকারশাস্ত্র)

এসব বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে।

আমরা পর্যায়ক্রমিক ভাবে পাঠ শুরু করবো, ইনশাআল্লাহ…………………

 

Next Part



Post a Comment

0 Comments