প্রশ্নঃ অনুষ্ঠান বা খেলাধুলায় হাত তালি দেওয়ার বিধান কি?
উত্তরঃ
আমাদের পরিবার, সমাজে সব জায়গায় হাত তালি দেওয়ার বিষয়টি প্রচলিত। আমরা ব্যক্তিগত ভাবে যে কোন অনুষ্ঠান, আনন্দ উল্লাস করার সময় হাত তালি দেই। খেলা দেখার সময়, অন্যান্যা অনুষ্ঠান দেখার সময় আমরা এগুলো বিবেচনা করি না। স্যার ড. জাকির নায়েক যখন লেকচার দেন তখনও হাততালি দেওয়ার মাধ্যমে অভিবাদন জানানো হয়। এগুলো বিধর্মীদের সংস্কৃতি ।
স্যার ড. জাকির নায়েকের অনুষ্ঠানে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী থাকে তাদের উপর তো আর ইসলামের বিধান প্রযোজ্য নয়। যেহেতু তারা এখনও ইসলামই গ্রহণ করে নি। কিন্তু মুসলিমদের জন্য এ সব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরী। নিম্নে হাততালি দেওয়ার বিধান আলোচনা করা হলো, যা মাসিক আল ই’তিসাম নামক পত্রিকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
”হাত তালি দেওয়া একটি জাহেলী প্রথা।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘কাবাগৃহে তাদের ছালাত বলতে ছিল শুধু শিস দেওয়া ও হাত তালি দেওয়া’। (সুরা আনফাল, ৩৫)
সুতরাং শুধু ইবাদতের ক্ষেত্রেই নয়;
বরং ইবাদতের বাইরেও বিভিন্ন অনুষ্ঠান, খেলাধুলা কিংবা আনন্দায়ক কোনোকিছু দেখে
হাত
তালি দেওয়া জায়েজ নয়।
কারণ এতে জাহেলী যুগের মুশরিক ও বর্তমান যুগের অমুসলিমদের সাথে সাদৃশ্যতা অবলম্বন করা হয়।
যা বর্জন করা আবশ্যক।
কেননা, রাসূলুল্লাহ (সা্ঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের সাদৃশ্যতা গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।”
(মুসনাদে আহমাদ- ৫১১৫; আবু দাউদ- ৪০৩১; মিশকাত- ৪৩৪৭)
তথ্যসূত্রঃ
মাসিক
আল-ই’তিসাম (আগস্ট ২০২০)
ফাতওয়া
বোর্ড, আল-জামিয়াহ আস সালাফিয়্যাহ
.......আরও প্রশ্ন......
প্রশ্নঃ হাফহাতা শার্ট বা টিশার্ট (গেঞ্জি) পরে সালাত হবে কি?
উত্তরঃ
পুরুষদের জন্য নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরজ। আর দুই কাঁধসহ উপরের অংশটা ঢেকে রাখা ওয়াজিব বা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ । কনুই ঢেকে রাখার কোনো জরুরত নেই । বাংলাদেশে অনেকেই বলেন, হাফহাতা শার্ট, গেঞ্জি ইত্যাদি পরে সালাত আদায় করলে সালাত হয় না- কথাটা আসলে ওই রকম নয় । আসল কথা হলো- রাসূল (সা্ঃ) হজ্জে এবং অন্য সময়, হজ্জের ইহরামের সময় যে পোশাক পরা হয়, এটা পরেই তিনি আজীবন নামায পড়েছেন মদীনায়।
দর্শক, আপনারা হয়ত দেখেছেন ইহরামের পোশাকে কনুইটা খুলে যায়। হাফহাতার মতোই । কাজেই কাঁধ ঢেকে রাখা জরুরী কনুই ঢেকে রাখা জরুরী নয়। অতএব গেঞ্জি বা হাফহাতা শার্ট পরে সালাত আদায় করলে সালাতের কোনো ক্ষতি হবে না ।
প্রশ্ন: রমাযান মাসে রােযা রেখে নখ-চুল কি কাটা যাবে?
উত্তর: বােন, উত্তর দেয়ার আগে একটু পেছনে যাই। রমাযানের রােযা কেন নষ্ট হয়! ইবাদত তাে আপনার জন্য। আপনি যেন ইবাদতের মাধ্যমে সুন্দর মানুষ হন। আল্লাহ তাআলা পানাহার নিষেধ করেছেন। কাজেই পানাহার নয় এমন সবই করা যায়। নখচল শুধু না, একটা হাত কেটে গেলেও রােযার কোনাে ক্ষতি হবে না। আমরা অনেক সময় মনে করি, রক্ত বেরিয়ে গেলে রােযার ক্ষতি হয়। আসলে কিন্তু তা নয়। রাসূল (সা) রােযা অবস্থায় নিজে চিকিৎসার জন্য শরীর ছিদ্র করে হিযামা (শিঙ্গা লাগিয়েছেন) করেছেন। কাজেই আমাদের বুঝতে হবে, রক্ত বেরােলেও রােযা ভাঙে , ইঞ্জেকশন নিলেও রােযা ভাঙে না। নখ-চুল কাটলে তাে রােযা ভাঙার প্রশ্নই আসে না, রােযার কোনাে ক্ষতিও হয় না।
তথ্যসূত্রঃ
জিজ্ঞাসা ও জবাব ১ম খন্ড
(ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর); পৃষ্ঠা- ০৯।
0 Comments