ইসলামে দাসপ্রথা, ইসলাম কি দাসপ্রথার প্রচলন করেছে নাকি বিলুপ্ত করেছে? আযান হওয়ার সাথে সাথেই মহিলারা সালাত আদায় করতে পারবে কি না?

39 প্রশ্ন: স্বাধীন ব্যক্তিকে দাস বানানো কি বৈধ?

উত্তরঃ ইসলামই সর্বপ্রথম দাসপ্রথাকে সীমিত করে। দাসপ্রথা পৃথিবীর প্রায় শুরু থেকেই চলে আসছে। আমরা জানি, যখন থেকে পুঁজিব্যবস্থা তৈরি হয়, সামন্তব্যবস্থা তৈরি হয়, তখন থেকেই দাসপ্রথা জন্ম নেয়। বিভিন্ন ধর্মে, বাইবেলে, বেদে, গীতায় দাসপ্রথাকে সমর্থন করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা দাসপ্রথাকে একেবারে মিটিয়ে দেন নি। কারণ, তখন দাসপ্রথার উপর অর্থনীতির ভিত্তি ছিল। পাশাপাশি দাসদাসী যেন নতুন করে না হয়, যারা আছে তারা যেন মুক্ত হয় এ জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা দিয়েছেন ।

বাধ্যতামূলক দাস মুক্ত করা, যাদের সামর্থ্য আছে তাদের মুক্ত করে দেয়া.... তারমধ্যে একটা হল, কারাে যদি ক্রীতদাসী থাকে, তাকে যদি স্ত্রী হিসেবে ব্যবহার করে এবং তার গর্ভে সন্তান হয়- ওই দাসী আর দাসী থাকে না। সে মুক্ত হয়ে যায়। এই জন্য দাসীকে কেউ স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে চাইলে সে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। এবং এর মাধ্যমে তার মুক্তি পাওয়ার একটা পথ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ইসলামের নির্দিষ্ট ব্যবস্থা রয়েছে। বিবাহের মতােই। অনেক শর্তসাপেক্ষ। আর যেহেতু দাস প্রথাই নেই, কাজেই কোনাে স্বাধীন মানুষকে ক্রয় করা জঘন্যতম হারাম। বিক্রয় করা জঘন্যতম হারাম। এর মাধ্যমে কোনাে দাসদাসী হয় না। যেগুলাে ছিল তাদেরকে আস্তে আস্তে কমানো হয়েছে। এক পর্যায়ে উঠে গিয়েছে। কাজেই নতুন করে দাস বা দাসী হিসেবে কাউকে গ্রহণ করা, স্বাধীন মানুষকে বিক্রয় করা, ধরে এনে বিক্রয় করা এগুলাে জঘন্যতম অপরাধ। এর মাধ্যমে কেউ দাস হিসেবে গণ্য হয় না । ইসলাম এই প্রথাকে খুবই নিরুৎসাহিত করেছে।

প্রথমত একটা চৌবাচ্চায় পানি আসে। পানির নালাগুলাে বন্ধ করে দিলে পানি আসা বন্ধ হয়ে যাবে। এরপরে যদি বেরােনাের ড্রেন করে দেন, তাহলে আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। অনেক সময় আমাদের মনে হয়, মদের মতাে দাসপ্রথা একবারে হারাম করে দিলেই তাে হত। সমস্যা হয়েছিল যে, তৎকালীন অর্থনীতি, ব্যবসা, বাণিজ্য, ট্রেড- সবকিছু এই দাসব্যবস্থাপনার উপরে ছিল এবং দাসেরাও পরনির্ভর ছিল। আল্লাহ কুরআনে বলেছেন:

والذي ينتغون الكتاب ما ملكت أيمانكم فگابوهم إن علمتم فيهم خيرا

যদি কোনাে ক্রীতদাস মুক্ত হতে চায়, তােমরা যদি তাদের যােগ্যতা পাও, তাদেরকে মুক্ত হতে সাহায্য করাে । এবং সর্বশেষ ইনস্টলমেন্টগুলাে তােমরা দিয়ে দাও। এটা সূরা নূরে আল্লাহ পাক বলেছেন। (সূরা নূর, আয়াত-৩৩)।


37 প্রশ্ন: (এক নারীর প্রশ্ন) আমাদের আশেপাশে অনেক মসজিদ আছে। কোনাে এক মসজিদে আযান দিলে কি আমি সাথে সাথে নামাযটা পড়তে পারব? নাকি সব মসজিদে আযান শেষ হওয়ার পর নামায পড়ব?

উত্তর: আসলে আযানের চেয়েও জরুরি হল ওয়াক্ত হওয়া, সময় হওয়া। আমাদের দেশে সাধারণত রমাযানে ফজরের আযান সময় মতাে দেয়া হয়। মাগরিবেও সময় মতাে দেয়া হয়। অনেক ওয়াক্তে বিলম্বে দেয়া হয়। যেমন যুহরের ওয়াক্ত বারােটার আগে বা বারােটার পরে শুরু হয়। আমরা আযান দিই সােয়া একটা বা তারও পরে। এজন্য যারা ঘরে সালাত আদায় করবেন, যাদের জামাআতে যাওয়ার কোনাে জরুরত নেই, তারা ওয়াক্ত হলেই ঘরে সালাত আদায় করতে পারেন, কোনাে অসুবিধা নেই । কাজেই আযান হওয়ার পরপরই আপনি সালাত আদায় করবেন। মসজিদের জামাআতের জন্য অপেক্ষা করা মহিলাদের জন্য কোনাে নির্দেশনা নয় ।


34 প্রশ্ন: আমার ডিপিএস আছে। এর উপর যাকাত দিতে হবে কি না? 

উত্তর: জি, ডিপিএস এবং সকল রকমের সঞ্চিত অর্থের যাকাত দিতে হবে। যেটার মালিক আপনি। আপনি চাইলে ফেরত পাবেন। ডিপিএসসহ ব্যাংকে যতাে রকম টাকা রাখা হয়, সবকিছুর মালিক আমরা। আমরা চাইলে ফেরত পাব। যে পরিমাণ অর্থ আমি জমা দিয়েছি এবং এই বছরে চাইলে যতটুকু লাভ আমি পাব (যদি শরীআহসম্মত হয়), এই পুরাে টাকার যাকাত দিতে হবে। আমার অর্থের সম্পূর্ণ যাকাত দিতে হবে।





Post a Comment

0 Comments