How to concentrate on prayer -09 নামাজে মনোযোগী হবেন কিভাবে? পর্ব-০৯

 নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় -০৯ 

( সিজদার স্থানে তাকানো )

হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর মাথাকে সামনের দিকে কাত করে দৃষ্টিকে অবনত রেখে এবং মাটির দিকে তাকিয়ে নামাজ পড়তেন (আল হাকীম, /৪৭৯ সিফতুস সালাহ, ৮৯)

রাসূলুল্লাহ (সা) যখন কাবায় ঢুকতেন তখন বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত কোন সময়ই তাঁর দৃষ্টি সিজদার জায়গা ছেড়ে অন্যত্র যেত না ( আল মুসতাদরাক আল হাকীম, /৪৭৯; ইরওয়া আল গালীল, /৭৩)

যখন কোন ব্যক্তি তাশাহুদ পড়ার জন্য বসে তখন নামাজ/সালাত থেকে তারউচিত সেই আঙ্গুলের দিকে তাকানো যা দিয়ে সে দিক নির্দেশ করছে, কারণ বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা) বুড়া আঙ্গুলের পরের আঙ্গুল কিবলার দিকে নির্দেশ করতেন এবং তাঁর দৃষ্টিকে সেদিকেই কেন্দ্রীভূত করতেন (ইবনে খুজাইমা, /৩৫৫, সিফাত আস সালাহ, ১৩৯)

অন্য এক বর্ণনায় আছে রাসূলুল্লাহ (সা) তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা কিবলার দিক নির্দেশ করতেন এবং এর পিছনে কোথাও দৃষ্টি সরাতেন না (আহমাদ, / ; আবু দাউদ, ৯৯০)

সালাতে/নামাজে চোখ বন্ধ করা কি সমর্থনযোগ্য?

কিছু নামাজীর মনে এই প্রশ্ন প্রায়ই আসে তা হলো নামাজের সময় চোখ বন্ধ করলে হৃদয়ে খুশুর বৃদ্ধি হয় কিনা? এর উত্তরে বলা যায় যে এটা সুন্নাহর পরিপন্থি চোখ বন্ধ করার ফলে সিজদার জায়গায় এবং আঙ্গুলের দিকে তাকানোর যে নির্দেশ রাসূলুল্লাহ (সা) দিয়েছেন তা এড়িয়ে যাওয়া হয় কিন্তু এরপরেও কিছু বিষয় আছে একজন বিশেষজ্ঞ আল্লামাহ আবু আব্দুল্লাহ ইবনুল কাইয়্যুম () এর মতে, নামাজে চোখ বন্ধ রাখা রাসূল (সা) এর শিক্ষার অংশ নয় আমরা ইতোমধ্যেই তাশাহুদ এবং দোয়ার সময় কিভাবে রাসূলুল্লাহ (সা) আঙ্গুলের দিকে তাকাতেন তা বর্ণনা করেছি আমরা আরও বলেছি যে তিনি তর্জনী আঙ্গুলের বাইরে তাঁর চোখ বা দৃষ্টি নড়াচড়া করাতেন না

এই সত্যের একটি ইঙ্গিত হলো রাসূল (সা) সালাতুল কুছুফ (সূর্যগ্রহনের নামাজ) প্রায়ই নামাজের মধ্যে যখন জান্নাতের থোকা থোকা আঙ্গুর দেখতেন তখন তা নেবার জন্য হাত প্রসারিত করতেন তিনি জাহান্নামও দেখতেন যেখানে থাকত লাঠির মালিক এবং বিড়ালসহ সেই মহিলা যে বিড়ালটিকে কষ্ট দিয়েছিল অনুরুপভাবে তিনি তাঁর সামনে দিয়ে যাওয়া যে কোন জন্তুকে ঠেলে পিছনে সরিয়ে দিতেন যাতে নামাজের সামনে দিযে সে না যায় তিনি এভাবে একটি বালককে পিছনে দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলেন এবং একটি তরুনী এবং পরে আরও দুটি তরুনীর ক্ষেত্রে একাজই করেছিলেন নামাজে/সালাতে যারা তাঁকে সম্ভাষণ জানাত তাদের তিনি হাত নেড়ে দূরে সরিয়ে দিতেন

সংক্রান্ত একটি হাদিস আছে, যেখানে বলা হয়েছে যে রাসূলুল্লাহ (সা) কে প্ররোচিত করার জন্য শয়তান অনেকভাবে চেষ্টা করত এবং রাসূলুল্লাহ (সা) এমতাবস্থায় শয়তানকে খপ করে ধরতেন এবং শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করতেন হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে, রাসূলুল্লাহ (সা) নামাজে চোখ বন্ধ করতেন না ফকীহগণ এটা মাকরুহ এর ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করেন

ইমাম আহমাদ () এবং তার অনুসারীরা এটাকে মাকরুহ মনে করে বলেন যে, এটা ইহুদীদের কাজ কিন্তু অনেকেই এটাকে মাকরুহ বলে গ্রহণ করেন না তারা ব্যাপারে নমনীয় ভাব পোষণ করেন আসল কথা হলো চোখ বন্ধ করাটা নামাজে খুশুকে প্রভাবিত করে না, তবে এটা না করাই ভালো কিন্তু সাজসজ্জা, অলংকরণ ইত্যাদি কারণে যদি মনোযোগ খুশুর উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তবে এটা মাকরুহ হবে না এবং এমতাবস্থায় নামাজে চোখ বন্ধ করতে দোষ নেই মতামত হলো ক্ষেত্রে মাকরুহ বলার চেয়ে শরীয়ার লক্ষ্য উদ্দেশ্যর কাছাকাছি কিনা মুস্তাহাব বলাই ভালো (যাদুল মাআদ, /২৯৩)

সুতরাং এটা পরিষ্কার যে যতক্ষণ না কোনকিছু খুশুর উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে বা মনোযোগ বিচ্ছিন্ন করে ততক্ষণ নামাজে/সালাতে চোখ বন্ধ করা যাবে না





Post a Comment

0 Comments