লোক দেখানো সালাত/নামাজের পরিণতি কি? কষ্ট হলে রোযা ছেড়ে দেয়া যাবে কি? যে কোন সময়ই কি দুফ বাজিয়ে গীত বা গান গাওয়া বৈধ?

 লোক দেখানো (রিয়াযুক্ত) সালাত/নামাজের পরিণতি 

উত্তরঃ 

লোক দেখানো সালাত/নামাজ দাজ্জালের চেয়েও বড় ফিতনা

আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক সময় আমরা মসীহ দাজ্জাল প্রসঙ্গে আলোচনা করছিলাম, সে সময় আমাদের মাঝে রাসূল করীম (সা) উপস্থিত হলেন এবং আমাদের কথা শ্রবণ করে তিনি বললেন, আমি তোমাদের  দাজ্জালের চেয়েও ভয়ংকর একটি ফিতনা প্রসঙ্গে জানাব? জবাবে আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! অবশ্যই বলুন, তখন রাসূল (সা) বললেন, শিরক দাজ্জালের ফিতনার চেয়েও অধিক ভয়ংকর আর তা হচ্ছে, এক ব্যক্তি সালাতের/নামাজের জন্য দাঁড়াবে এবং অন্য কেউ তার সালাতের/নামাজের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে দেখে সে সালাত/নামাজ কে দীর্ঘ করবে

(ইবনে মাজাহ, ২য় খন্ড, হাদিস নং- ৩৩৮৯

প্রশ্ন: কোনাে ব্যক্তি যদি কোনাে কারণবশত রােযা রাখতে না পারে, হয়তাে তার কষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে কাফফারা দিলে কি আদায় হবে?

উত্তর: আসলে কষ্ট বলতে আপনি কী বােঝাচ্ছেন! কষ্টের মাত্রা রয়েছে। একটা হল আমার কষ্ট হচ্ছে। আরেকটা হল আমার শরীরের ক্ষতি হচ্ছে। সেরেফ কষ্টের জন্য তাে রােযা ছাড়া যাবে না। কিছু কষ্ট তাে করতেই হবে। কষ্টের মাধ্যমেই আমাদের ইবাদত করতে হয় আমাদের নিজেদের কল্যাণের জন্য। কষ্ট করে শরীরচর্চা না করলে মেদ হয়ে যায়। কষ্ট করে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ না করলে অসুস্থ হয়ে পড়ব।
এই কষ্টের জন্য রােযা বাদ দেয়ার প্রশ্ন ওঠে না। তবে যদি ক্ষতি হয়, রােগ বেড়ে যায়, অসুস্থতা আসে, সেক্ষেত্রে তিনি রােযা ছেড়ে দেবেন। যদি সামনে ভালাে হওয়ার আশা থাকে তাহলে রােযাগুলাের কাজা করবেন। না হলে প্রতিটি রােযার বিনিময়ে একজন দরিদ্রকে দুই বেলা খাওয়াবেন। অথবা একটা রােযার জন্য একটা ফিতরা পরিমাণ খাদ্য বা অর্থ দরিদ্রকে দিয়ে দিবেন।

তথ্যসূত্র: জিঙ্গাসা ও জবাব ১ম খন্ড (ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর)

  বিয়ে ও  ঈদ বাদে অন্য সময় দুফ বাজানো

খেলাধুলা বিয়ে ও ঈদের সময় ‘দুফ’ বাজিয়ে ছোট ছোট মেয়েরা বৈধ গীত গাইতে পারে। অন্য খুশীর উপলক্ষ্যেও কি অনুরূপ দুফ বাজিয়ে গীত গাওয়া যায়?

বিয়ে ও ঈদ ছাড়া অন্য কোন খুশীর উপলক্ষ্যে ‘দুফ’ বাজানো বৈধ নয়। একদা কোন যুদ্ধ থেকে মহানবী ﷺ বিজয়ী হয়ে ফিরে এলে একটি কৃশকায় দাসী এসে বলল, ‘(হে আল্লাহর রাসুল!) আমি নযর মেনেছিলাম যে, আপনি ভালভাবে ফিরে এলে আমি আপনার কাছে দুফ বাজাব।’ নবী ﷺ বললেন, “তুমি যদি নযর মেনে থাকো, তাহলে তা পুরা কর। আর না মেনে থাকলে তা করো না।” সুতরাং দাসীটি দুফ বাজাতে থাকল। ইতিমধ্যে আবু বাকর এসে প্রবেশ করলেন। তখনও সে বাজাতে থাকল। অন্য কেউ এসে উপস্থিত হলেও সে বাজাতে থাকল। অবশেষে উমার প্রবেশ করলে দুফটাকে সে নিজ পেছনে লুকিয়ে কাপড়ে মুখও লুকাতে লাগল। তা দেখে আল্লাহ্‌র রাসুল ﷺ উমারের উদ্দেশ্যে বললেন, “শয়তানও তোমাকে ভয় পায় হে উমার!”  (আহমাদ, তিরমিযী, সিঃ সহীহাহ ১৬০৯ নং)

উক্ত হাদিস থেকেও বুঝা যায় যে, বিয়ে ও ঈদ ছাড়া অন্য উপলক্ষ্যে দুফ বাজানো বৈধ নয়। অবশ্য নযর পালন করা ও সে ব্যাপারে নবী ﷺ এর অনুমতি দেওয়া এ কথার দলীল যে, এ কেবল তার ফিরে আসার জন্য নির্দিষ্ট। যেহেতু তার নিরাপদে ফিরে আসার বিষয়টি ঈদ ও বিয়ের চাইতেও বেশি খুশীর বিষয়।  (আলবানী)

আবদুল হামীদ ফাইযী








Post a Comment

0 Comments