নামাজে সিজদার মধ্যে দুয়া বা মুনাজাত করার বিধান, সিজদায় মাতৃভাষায় দুআ করা যাবে কি? ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ) Islamic Question & Answer

 প্রশ্ন: নামাযের সিজদার মধ্যে যে মুনাজাতটা আছে- এটা বিস্তারিত জানতে চাই। 

উত্তর: এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, বিশেষ করে এই রমাযানে আমরা আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দুআ করব। রাসূল (সা) এর শেষ অসিয়ত, রবিউল আউয়াল মাসের। সম্ভবত ১২ তারিখ সােমবার দিন সকাল বেলায় তাঁর সাহাবিগণ ফজরের সালাত আদায় করছেন, রাসূল (সা) ঘরেই আছেন, অসুস্থতার কারণে কাঁধে ভর দিয়ে দরজার কাছে দাঁড়ালেন। পর্দা সরানাে হল। সাহাবায়ে কেরাম আনন্দে উল্লসিত হলেন, রাসূল (সা) হয়ত সুস্থ হয়েছেন, তিনি নামাযে দাঁড়াবেন, ইমামতি করবেন। তিনি ইশারা করলেন যে তােমরা থাকো।

তারপর বললেন, রুকুতে তােমরা রবের তাযীম প্রকাশ করবে, যখন সিজদা করবে, তখন বেশি বেশি দুআ করবে এবং সিজদার দুআ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। কাজেই আমরা সিজদায় সব দুআই করব। সবকিছু চাইব। দুনিয়া আখেরাতের সকল বিষয় চাইব। তবে চওয়ার ভাষাটা হবে আল্লাহ তাআলার কাছে আবেদনের ভাষা। মানুষে মানুষে কথার ভাষা নয়। রাসূল (সা) এর শেখানাে সুন্নাত দুআগুলাে মুখস্ত করলে ভালাে হয়।


প্রশ্ন: নামাযের সিজদার মধ্যে মাতৃভাষায় দুআ করা জায়েয কি না? 

উত্তর: এটা আমাদের দেশের জন্য বেশ জটিল প্রশ্ন। কারণ আমাদের দেশে ফিকহের যে কিতাবগুলাে পড়ানাে হয় সেখানে লেখা হয়েছে যে মাতৃভাষায় দুআ করা মাকরুহ। কেউ কেউ বলেছেন মাকরুহ মানে মাকরুহে তানযীহি অনুচিত। কেউ বলেছেন মাকরুহে তাহরীমি। এটা হল হানাফি মাযহাবের ফকীহগণের মত ।

তবে মিশর, সৌদি, সিরিয়া, তুরস্কের হানাফি ফকীহগণ বলেন, অনারব ভাষায় মাতৃভাষায় সালাতের সিজদার মধ্যে দুআ করায় দোষ হতে পারে না। কারণ দুআ তাে বান্দা আল্লাহ তাআলার কাছে নিজের মাতৃভাষাতেই করবেন। তবে আমরা কুরআনের আয়াতের দুআ অথবা হাদীসের দুআ দ্বারা দুআ করার চেষ্টা করব । এরপরেও যদি কেউ একান্ত না পারেন তবে নফল সালাতে, তাহাজ্জুদের সালাতে মাতৃভাষায় দুআ করতে পারেন। বিশেষ করে করআন হাদীসের দুআর অর্থগুলাে মনের আবেগে বলতে পারেন।

তথ্যসূত্র: জিঙ্গাসা ও জবাব ১ম খন্ড







Post a Comment

0 Comments