জুমার দিন দুয়া কবুলের সময় কখন? জুমার দিনের গুরত্বপূর্ণ সময়

 জুমার দিন দুয়া কবুলের সময় কখন? 

বিদ্বানগণ জুমার দিন দোয়া কবুলের সঠিক সময় নিয়ে মতভেদ করেছেন   এ বিষয়ে ৪৩ টি মতভেদ উল্লেখিত হয়েছে ।  তার মধ্যে দুটি মত সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ও প্রমাণিত ।  
১।  ইমাম সাহেবের মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত। 
আবূ মূসা আল আশ‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি তোমার পিতাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে জুমু‘আর দিনের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছ? বর্ণনাকারী বলেনঃ আমি বললাম, হ্যাঁ। আমি পিতাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ ইমামের বসা থেকে সলাত শেষ করার মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে সে মুহূর্তটি নিহিত।
(সহিহ মুসলিম, ১৮৬০)

২। আসর এরপর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ।  

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমু’আহর দিনই হচ্ছে সর্বোত্তম। আদম (আ)-কে এদিনেই সৃষ্টি করা হয়েছিলো। এদিনই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিলো। এদিনই তাঁর তাওবা কবুল হয়েছিলো। এদিনই তিনি ইন্তিকাল করেছিলেন এবং এদিনই ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে। জিন ও মানুষ ছাড়া প্রতিটি প্রাণী শুক্রবার দিন ভোর হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত ক্বিয়ামাতের ভয়ে ভীত থাকে। এদিন এমন একটি বিশেষ সময় রয়েছে, সালাতরত অবস্থায় কোন মুসলিম বান্দা মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে কোন অভাব পূরণের জন্য দু‘আ করলে মহান আল্লাহ তাকে তা দান করেন। কা‘ব বলেন, এসময়টি প্রতি একবছরে একটি জুমু’আহর দিনে থাকে। আমি (আবূ হুরায়রা) বললাম, না, বরং প্রতি জুমু’আহর দিনে থাকে। অতঃপর কা‘ব (এর প্রমাণে) তাওরাত পাঠ করে বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যই বলেছেন।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, অতঃপর আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি অবহিত করি। সেখানে কা‘ব (রাঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, আমি দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়টি সম্পর্কে জানি। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমাকে তা অবহিত করুন। তিনি বলেন, সেটি হল জুমু’আহর দিনের সর্বশেষ সময়। আমি (আবূ হুরায়রা) বললাম, জুমু’আহর দিনের সর্বশেষ সময় কেনম করে হবে? অথচ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যেকোন মুসলিম বান্দা সালাতরত অবস্থায় ঐ সময়টি পাবে.....।” কিন্তু আপনার বর্ণনাকৃত সময়ে তো সালাত আদায় করা যায় না। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেননি, যে ব্যাক্তি সালাতের জন্য বসে অপেক্ষা করবে সে সালাত আদায় না করা পর্যন্ত সালাতরত বলে গন্য হবে। আবূ হুরায়রা বলেন, আমি বললাম, হাঁ। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, তা এরূপই।

(সুনানে আবু দাউদ, ১০৪৬)

অন্য বর্ণনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমার দিনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে  যদি কোন মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে  তাহলে সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে তা দান করেন।  এ মুহূর্তটি তোমরা আসরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো।  
(আবু দাউদ ১০৪৮) 

উল্লেখ্য যে,  বরকত ও ফজিলত এর আশায়  কেবল জুমার রাত্রিকে নির্দিষ্ট করে জাগরণ করা নিষিদ্ধ ।
(মুসলিম/১১৪৪)

তথ্যসূত্রঃ
আত তাহরীক (মার্চ ২০১৮)





Post a Comment

0 Comments