সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হয়েও নিকৃষ্টতম অবস্থা
অর্থঃ অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম গঠনে।" [১]
আল্লাহ তাআলা প্রতিটি প্রাণীকে সৃষ্টি করেছেন নিচুমুখী করে। কেবলমাত্র মানুষকে সৃষ্টি করেছেন আলম্বিত দেহ সোজা করে; যে নিজের হাত দিয়ে পানাহার করে। তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে যথোপযোগী বানিয়েছেন। তাতে পশুর মত বেমানান ও অসামঞ্জস্য নেই। প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তার মাঝে উচিত ব্যবধানও রেখেছেন। তাতে বিবেক-বুদ্ধি, চিন্তা-চেতনা, বোধশক্তি, প্রজ্ঞা, শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি দান করেছেন। যার ফলে মানুষ আসলে তাঁর কুদরতের প্রকাশস্থল এবং তাঁর শক্তিমত্তার প্রতিবিম্ব। [২]
ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন : تقويم অর্থ সোজা সামঞ্জস্যপূর্ণ করে সৃষ্টি করেছেন। ইবনুল আরাবী (রহঃ) বলেন : আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টিসমূহের মধ্যে মানুষের চেয়ে উত্তম আর কোন সৃষ্টি নেই। আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে, বিবেক বুদ্ধি, বোধশক্তি, শ্রবণ, প্রজ্ঞা ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন করে সৃষ্টি করেছেন। [৩]
এত কিছু পাওয়ার পরেও মানুষ হয়ে যায় পাপাচারী, অবাধ্য। এমনকি মনে হয় জন্তু-জানোয়ার গুলো যে আচরণ করতে লজ্জা পাবে, ভয় করবে মানুষ সে কাজগুলো করতেও দ্বিধা করে না। আফসোস,,,
এসব মানুষগুলো আরো জন্তু জানোয়ারের ন্যায় হতে চায় আর এতেই নিজেকে সুখী মনে করে। এরা মানুষের মধ্যে পশুসুলভ আচরণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আর তাইতো এদের পরিণামও ভয়াবহ।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
- ثُمَّ رَدَدۡنٰهُ اَسۡفَلَ سٰفِلِیۡنَ
অর্থঃ তারপর আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি হীনদের হীনতম রূপে।" [৪]
وَ الۡعَصۡرِ ۙ﴿۱
اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ ۙ﴿۲
মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ হে মানুষ! তুমি যখন তোমার প্রথমবারের সৃষ্টি সম্পর্কে জানো তখন শাস্তি ও পুরস্কারের দিনের আগমনের কথা শুনে এবং পুনরায় জীবিত হওয়ার অর্থাৎ পুনরুত্থানের কথা শুনে এটাকে বিশ্বাস করছো না কেন? এ অবিশ্বাসের কারণ কি? কোন বস্তু তোমাকে কিয়ামত সম্পর্কে অবিশ্বাসী করেছে? যিনি প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন তাঁর পক্ষে পুনরায় সৃষ্টি করা কি কঠিন কাজ? [৭]
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন-
وَ لَقَدۡ ذَرَاۡنَا لِجَہَنَّمَ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ ۫ۖ لَہُمۡ قُلُوۡبٌ لَّا یَفۡقَہُوۡنَ بِہَا ۫ وَ لَہُمۡ اَعۡیُنٌ لَّا یُبۡصِرُوۡنَ بِہَا ۫ وَ لَہُمۡ اٰذَانٌ لَّا یَسۡمَعُوۡنَ بِہَا ؕ اُولٰٓئِکَ کَالۡاَنۡعَامِ بَلۡ هُمۡ اَضَلُّ ؕ اُولٰٓئِکَ هُمُ الۡغٰفِلُوۡنَ ﴿۱۷۹
আর এভাবেই সৃষ্টির সেরা জীবটি সবচেয়ে নিকৃষ্টতর আবাস্থল জাহান্নামে পৌছে যায়।
তথ্যসূত্রঃ
[১] সুরা তীন/৪
[২] তাফসিরে আহসানুল বায়ান (সুরা তীন/৪)
[৩] তাফসিরে ফাতহুল মাজীদ (সুরা তীন/৪)
[৪] সুরা তীন/৫
[৫] তাফসিরে ইবনে কাসির (সুরা তীন/৫)
[৬] সুরা আছর/১-৩
[৭] তাফসিরে ইবনে কাসির (সুরা তীন/৫)
[৮] সুরা আরাফ/১৭৯
.......আরও পড়ুন........
মুত্তাকী তথা আল্লাহভীরু কারা? তাদের পরিচয়
মিরাজে সালাত/নামাজ ফরজ হওয়ার ঘটনা
0 Comments